‘বেশ্যা’ প্রসঙ্গে কবি রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ খুব ঠিক আছেন

“বেশ্যাকে তবু বিশ্বাস করা চলে
রাজনীতিকের ধমনী শিরায় সুবিধাবাদের পাপ
বেশ্যাকে তবু বিশ্বাস করা চলে
বুদ্ধিজীবীর রক্তে স্নায়ুতে সচেতন অপরাধ
বেশ্যাকে তবু বিশ্বাস করা চলে
জাতির তরুণ রক্তে পুষেছে নির্বীর্যের সাপ”

– রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ (১৯৫৬-১৯৯১)

“বেশ্যাকে তবু বিশ্বাস করা চলে”—কবি রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহর কবিতার এই লাইন নিয়া কিছু কবির কিছু বিষোদগার চোখে পড়ল।

আমি এই লাইন খুব ঠিক আছে বইলা মনে করি। তবে কবিতায় যাদের সঙ্গে যাদেরকে তুলনা করছেন রুদ্র এই তুলনার কোনো গুরুত্ব দেখি না। সব পেশার সব মানুষ যদি এক রকমের না হয় তবে এই তুলনারে অভিমানের বেশি গুরুত্ব দেওয়া যায় না।

এই ফাঁকে বইলা নেই, রুদ্র আমার প্রিয় কবি না। বলার দরকার পড়ত না, কিন্তু এই দেশে কারো বিষয়ে কথা বলতে গেলে ধইরা নেওয়া হয় যার বিষয়ে বলা হচ্ছে তার সব কাজেই বলুয়ার সায় আছে। শুধু ধইরা নিলে কথা ছিল না, ওইভাবেই প্রচার করা হয়। ফলে সোসাইটিতে মিস রিডিং চলে।

তো কবি রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহর কবিতার এই লাইনের মধ্যে কোনো পুরুষতান্ত্রিক দোষ বা নারী বিরোধী কিছু দেখি না। এবং বেশ্যাবিরোধী পুরুষালী অবস্থানও এইটা নয়।

বরং এইটায় যাদের আপত্তি তারাই পুরুষতান্ত্রিক।

কারণ, বেশ্যাকে বেশ্যা বলতে না দেওয়াটা নব্য পুরুষতান্ত্রিক ‘প্রগতি’বাদী আচরণ। কারো পেশানামকে হেয় কইরা তার পেশার প্রতি শ্রদ্ধা করার একটিভিজম এগুলি।

কবি হিসাবে রুদ্র বড় না ছোট সে আলোচনায় এই বেশ্যা লাইনটির কোনো উপযোগিতা নাই।

যারা রুদ্র বড় কবি নন বইলা ধমকাইতেছেন এদের সকলকে বড় কবি ধইরা নেওয়া না গেলে রুদ্রকে কেন বড় বা ছোট ধরতে হবে তা অস্পষ্ট থেকে যায়।

কবি হিসাবে এনারাও তো সব মামুলি, তো রুদ্রের একলা বড় হইতে হবে কেন?

১৭/১০/২০১৭

3 Comments

Add Yours →

Leave a Reply to আফনান Cancel reply